ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের হাতে তোফাজ্জেল নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তার বয়স আনুমানিক ২৭ বছর এবং তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানার সন্তান ছিলেন। তাকে প্রতিপক্ষের সদস্য মনে করে ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়, যার ফলে তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে ক্ষত সৃষ্টি হয় এবং শেষে তিনি নিহত হন।
তোফাজ্জেল একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। কলেজে পড়াশোনার সময় তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যানের মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু মেয়েটির বাবা পারিবারিকভাবে অন্য একজনের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন। এই ঘটনার প্রায় এক মাসের মধ্যেই তোফাজ্জেলের বাবা-মা মারা যান। প্রেমিকা এবং বাবা-মাকে হারানোর শোকে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারান।
তোফাজ্জেলের বড় ভাই ছিলেন পুলিশের এসআই। তিনিই ছিলেন তোফাজ্জেলের শেষ অভিভাবক। ভাই তাকে চিকিৎসা করিয়েছিলেন, তবে কিছুদিন পর বড় ভাইও মারা যান। ফলে তোফাজ্জেল মানসিকভাবে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েন এবং ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতে থাকেন।
বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উপস্থিত হলে, ছাত্ররা তাকে সন্দেহজনকভাবে প্রতিপক্ষের কেউ কিংবা চোর ভেবে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। তাদের ভুল ধারণার ফলে তোফাজ্জেলকে অমানবিকভাবে আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করা হয় এবং পরে তার মৃত্যু ঘটে।
বিভিন্ন ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, তাকে প্রথমে খাবার খাওয়ানোর পরও ঠান্ডা মাথায় শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এটি থেকে বোঝা যায়, বর্তমান ছাত্রসমাজ লেখাপড়া ছেড়ে রাজনীতির দিকে ঝুঁকেছে এবং রাজনৈতিক কুচক্রীদের প্ররোচনায় অমানবিক কাজ করছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগে লুটপাট, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া এবং নিরীহ মানুষদের হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে। ছাত্রসমাজ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আড়ালে সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেছে। এর ফলে সাধারণ মানুষ এখন হুমকির মুখে পড়েছে। তাদের এই কর্মকাণ্ড মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং সমাজের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বিপজ্জনক।
এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সবাইকে এক হয়ে এই অমানবিকতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি।
0 coment rios:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন