শিরোনাম: জিহাদ ও বর্তমান বাস্তবতা
জিহাদ—
শব্দটি মুখস্থ বিদ্যাদের মুখে শুনতে আমাদের
অনেকের কান ও মাথা
ব্যথা করত। এগুলো একশ
বছর বা তারও অনেক
আগের কথা, যখন নবী-রাসূলরা এই পৃথিবীতে ছিলেন।
সে সময়কার মুসলিম আর এখনকার মুসলিমদের
মাঝে অনেক ব্যবধান।
বর্তমানে
গাজা ও ইরানের কথা
আমরা শুনছি এবং দেখছি বিশ্বে
কী ঘটছে। মুসলিমদের উপর এমন নির্যাতন,
অত্যাচার ও হত্যা করা
হচ্ছে— আমরা সবাই তা
দেখছি। কিন্তু আমাদের কি কিছুই করার
নেই?
কিন্তু
আমাদের সমাজে ইসলামের দাওয়াতিরা যখন ওয়াজ-মাহফিল
করে, তখন তাদের উচ্চ
কণ্ঠস্বরে অনেকেই হার্ট অ্যাটাক করে। এমন উচ্চ
ধ্বনিতে ভঙ্গিমা দিয়ে মানুষকে বুঝায়,
আর তখনই সবাইকে যেন
জোর করে বেহেশতে পাঠিয়ে
দেয়! কিন্তু বাস্তবতা কোথায়?
শুধু
মুখের ধ্বনিতে আর মিছিলে তাদের
দেখা যায়। কিন্তু সত্যিকার
অর্থে ইসলামের জিহাদ কী ছিল, তা
আমরা বুঝি না। আমরা
শুধুই নিজেদের পথ-পদবির জন্য
জিহাদ করি। কিন্তু ইসলামের
জন্য কি কখনো জিহাদ
করেছি?
যুগ
যুগ ধরে মুসলিমরা আরাম-আয়েশেই অভ্যস্ত হয়েছে। আর যাদের আমরা
ইহুদি বা অন্য ধর্মীয়
মানুষ বলি, তারা সময়মতো
এমন কিছু তৈরি করে
রেখেছে যা দিয়ে বিশ্বের
মুসলিমদের কণ্ঠস্বর কেড়ে নেওয়া যায়।
এমন বোমা ও অস্ত্র
তৈরি করেছে, যাতে মুসলিমরা চুপ
থাকতে বাধ্য হয়।
আমরা
কি বর্তমানে ইসলামকে রক্ষা করতে পারছি? প্রতিটি
রাস্তায় আমাদের মার খেতে হচ্ছে।
কেন এমন হচ্ছে বলো?
কারণ আমরা কেউ ইসলামকে
অনুসরণ করি না, আর
ঠিকমতো পালন করি না।
প্রতিবাদ
করতে হবে আমাদের। যেখানে
যে নেতা দরকার, সেখানে
সেই নেতাকে প্রাধান্য দিতে হবে। আমরা
এমন পুতুল নেতা বানাব না,
যার মধ্যে আল্লাহর সাথে কোনো সম্পর্ক
নেই, যার কথায় আল্লাহ
কোনো কাজ কবুল করেন
না। এমন নেতাকে পরিবর্তন
এনে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
বর্তমানে
যেসব ঘটনা ঘটছে— একটি
মুসলিম দেশের জনগণকে হত্যা করে রক্তের নদী
বানিয়ে দিয়েছে। আর আমরা মুসলিম
সরকার হয়েও চুপ করে
বসে আছি! আবার শত্রুদের
সাথে হাত মিলিয়ে নারীদের
নিয়ে রঙ-তামাশায় মেতে
থাকি। এদের বর্জন করতে
হবে।
গাজার
শহরে মুসলিমদের আত্মচিৎকার— আর আমরা লেবাজ
মুসলিম নেতা, বিভিন্ন সমাবেশ করে উচ্চ কণ্ঠে
কথা বলে লোকসমাজে দেখাই,
যেন আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি!
কিন্তু ইসলামের জিহাদ তো এই সমাবেশ
নয়। আমি লোকসমাজের নেতা,
আমার অনেক দায়িত্ব— এই
জিহাদের উদ্যোগ আমাকে নিতে হবে। তা
না হলে তুমি ইসলামের
কী শিখেছ? কী জানো জিহাদ
মানে? আর যদি না
বুঝো, তবে তুমি কিসের
ইসলামের নেতা?
ধ্বংস
করে দাও আগে নিজেদের
প্রতারকদের। সেই সকল সরকার
বা রাজা— যাঁরা মুসলিম হয়ে মুসলিম দেশের
পক্ষে দাঁড়ান না, বরং অন্য
ধর্মীয় সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে
রঙ-তামাশায় মেতে আছেন— তাদের
পরিবর্তন করতে হবে।
এটাই
ইসলামের, আল্লাহর পথের জিহাদের কাজ।
ইসলামের জিহাদের সামনে পারমাণবিক অস্ত্রও পরাজিত হবে।
তোমরা
যদি ইসলামের ইতিহাস না জানো, তাহলে
কেউ ইসলামের নেতার চেয়ারে বসে থেকো না।
আর কেউ যদি এমন
চেয়ারে বসে থাকে, তবে
তাকে সরিয়ে দাও— এটাই তোমাদের
জিহাদের কাজ। কারণ দাউদ
(আঃ), যিনি তরুণ বয়সে
জালুত নামক এক বিশাল
দানব সদৃশ যোদ্ধাকে একটি
গুলতি (slingshot) দিয়ে হত্যা করেন—
এটা আল্লাহর শক্তির প্রমাণ।
তবে
তোমরা যদি সত্যিকার ইসলামের
নেতা হয়ে থাকো, তবে
আর কিছু বলার প্রয়োজন
নেই। কারণ তোমরা তো
ইসলামের নবীদের ইতিহাস জানো।
তাই
বর্তমানে তোমাদেরই এগিয়ে যেতে হবে। যারা
ইসলামের নেতা, তারা শুধু চোখে
দেখবে— এটা ইসলামের কাজ
নয়। এর জন্য দরকার,
সেইসব দেশ যারা ইসলামীভাবে
দেশ পরিচালনা করে, তাদের কাছ
থেকে সাহায্য ও সহযোগিতা গ্রহণ
করা। আর সেটা গ্রহণ
করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
বর্তমানে
ইসলামিক বা মুসলিমদের রক্ষা
করতে হলে— তোমাদের জিহাদ
করতে হবে। তা না
হলে মুসলিমদের রক্ষা করা সম্ভব নয়।
আর এটা মনে রাখতে
হবে, ১০০ জন শত্রুকে
না আক্রমণ করে একজনকে আক্রমণ
করাটা উত্তম— যতদিন তাদের মধ্যে পরিবর্তন না আসে, ততদিন
ঐ একজনকেই আক্রমণ করতে হবে। যতবার
আসবে, ততবার আক্রমণ করতে হবে।
তবে
মুসলিমদের কোনো মুসলিম দেশে
ইহুদি বা অন্য কোনো
ধর্মীয় ব্যক্তি কোনো বোমা বা
পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে পরাজিত করতে
পারবে না। তারা এটা
স্মরণ রাখবে— মুসলিমরা আত্মঘাতী হয়ে গেলে, তাদের
উপর অত্যাচার করলে তাদের জীবন
থাকবে না।
সারাবিশ্বে
এখন যেখানে মুসলিমদের উপর অত্যাচার চলবে,
সেখানেই আত্মঘাতী প্রতিরোধ চালাতে হবে— এটাই বর্তমান
বাস্তবতায় মুসলিম জিহাদের রূপরেখা।
0 মন্তব্যসমূহ